বিশেষ প্রতিবেদন:যত সময় গড়াচ্ছে, ততই শক্তিশালী হয়ে উঠছে ‘থাই’ ঝড় আমফান। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে ঘূর্ণিঝড়টি। দিল্লির মৌসম ভবন সূত্রে খবর, রবিবার বিকেলে শক্তি বাড়িয়ে অতিপ্রবল হয়ে ঘূর্ণিঝড়টি দিঘা থেকে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, ওডিশার পারাদ্বীপ থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং বাংলাদেশের খেপাপুরা থেকে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে রয়েছে।
ওডিশার রাজধানী ভুবনেশ্বরের আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা এইচ আর বিশ্বাস জানিয়েছেন, আমফানের প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ওডিশায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। মঙ্গলবার রাতে কিংবা বুধবার সকালে বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে এই দুর্ধর্ষ আমফান। আবহাওয়া দফতরের অনুমান, এই ঘূর্ণিঝড় ওডিশা ও পশ্চিমবাংলায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। বুধবার নাগাদ বাংলাদেশ ও পশ্চিমবাংলার উপকূল ভাগ পার করে চলে যাবে এই ঝড়। জানা গিয়েছে, আমফানের মোকাবিলায় পশ্চিমবাংলা এবং ওডিশায় নৌবাহিনী ছাড়া আরও ২০টি দলকে তৈরি রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় যেমন নৌবাহিনী থাকছে, তেমনই অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনমে নেভাল এয়ার স্টেশন আইএনএস ডেগা এবং তামিলনাড়ুর আরাককনামে আইএনএস রাজালিতে নেভাল এয়ালক্র্যাফ্টকেও তৈরি রাখা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই ওডিশা এবং পশ্চিমবাংলায় পৌঁছে গিয়েছে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফ। বিপর্যয় মোকাবিলায় এনডিআরএফ তৈরি বলে বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে। এনডিআরএফের ডিরেক্টর জেনারেল এসএন প্রধান জানিয়েছেন, ওডিশা এবং পশ্চিমবাংলায় মোট ১৭টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। এনডিআরএফের প্রধান কার্যালয় থেকে পুরো বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। রাজ্যগুলির সঙ্গে মৌসম ভবনও যোগাযোগ রাখছে বলে জানা গিয়েছে। মূলত পশ্চিমবাংলার ওপর দিয়েই যেতে পারে আমফান। শেষে যেতে পারে বাংলাদেশের দিকেও। তাই পশ্চিমবাংলার দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়ায় এনডিআরএফের সাতটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। আর ওডিশার পুরী, জয়পুর, ভদ্রক, বালাসোর, ময়ূরগঞ্জ এবং জগৎসিংপুরে এনডিআরএফের দশটি দল মোতায়েন রয়েছে।
সূত্রের খবর, উপকূল ভাগে আমফান যখন আছড়ে পড়বে, তখন তার গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার থেকে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত। আর কলকাতায় প্রবেশ করলে ঝড়টির বেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার। যদি উপকূলে আছড়ে পড়ার আগে ঝড়টি এই গতি হারিয়ে না ফেলে, বা অন্য দিকে ঘুরে না যায়, তা হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে স্থলভাগে। উল্লেখ্য, বিশ্ব আবহাওড়া সংস্থার ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সংস্থা এসকাপের নির্ধারিত তালিকা থেকে থাইল্যান্ড এই ঝড়ের নাম দিয়েছে ‘আমফান’।